ঢাকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

শিরোনাম

সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করলেন জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সদস্যরা

সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করলেন জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সদস্যরা

ঢাকা, শনিবার : বাজেট অধিবেশনের সমাপনী দিনে সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা। স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন অনিয়ম, অক্সিজেন সংকটে বিভিন্ন হাসপাতালে মানুষের মৃত্যু, করোনা চিকিৎসায় চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে তারা স্বাস্থ্য,ন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।

আজ শনিবার (৩জুলাই) সংসদের পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ‘নির্লজ্জ’ বলেও আখ্যায়িত করেন। এ সময় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে থাকলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অধিবেশনকক্ষে দেখা যায়নি।

এসময় জাতীয় পাটির কো-চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, কোভিড চিকিৎসার সময় নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়ার কারণে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। আবার, ‘ইংল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আনন্দে আত্মহারা হয়ে একটি কিস (চুমু) করার কারণে তাকে রিজাইন (পদত্যাগ) দিতে হয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে কি মানুষ! বুঝলাম না। উনার লজ্জা-শরম কিছু নাই। চরিত্র নেই। উনার রিজাইন দেয়া উচিত।’

সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবৃল হক চুন্নু আরো বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করেন। আজকে খবর আসছে, বাংলাদেশের ৩৭টি জেলায় অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালে পাঁচজন রোগী অক্সিজেন পায় তো ২০ জন লাইনে থাকে। কেবল অক্সিজেনের কারণে যারা ছটফট করে মারা যাচ্ছেন।’

এর আগে, বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মুহম্মদ সিরাজ বলেন, বগুড়া এখন করোনার হটস্পট। গেলো ৩ দিনে সেখানে ২৪ জন মারা গেছেন। সেখানে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সংকট। সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নেই। জেলার তিনটি কোভিড হাসপাতালে করোনা রোগীতে ঠাসা।’ 

বিএনপির আরেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদও সমালোচনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর । হারুনুর রশীদ বলেন, ‘গত বুধবার সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের মাধ্যমে গোটা হাউসকে অপমান করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেছিলেন যে সাংসদেরা জেলা হাসপাতালের চেয়ারম্যান হলেও দায়িত্ব পালন করেন না। মন্ত্রীর এই বক্তব্য ঠিক নয়। এই বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা দরকার।’

জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘সেদিন সংসদে আমি সার্জিক্যাল মাস্ক কেনা নিয়ে কথা বলেছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেটা তদন্ত করবেন।  কিন্তু তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বললেন, এটি সত্য নয়। এজন্য আজকে আমি তথ্য-প্রমাণ নিয়ে এসেছি। সংসদীয় কমিটি বিষয়টি আলোচনা করেছে, দুদকে গেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। সত্য বিষয়টি এড়িয়ে না গিয়ে উনার তদন্ত করা উচিত ছিল।’

জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘জিজ্ঞেস করলেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সব দিচ্ছি। কিন্তু কোথাও কিছু নেই। এভাবে আমরা একটা বছর সময় নষ্ট করেছি। আমাদের সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব দিলে, অর্থ দিলে আমরা সবকিছু ঠিক করে দিতে পারতাম। কিন্তু আমাদের ওপর দায়িত্ব নয়। দায়িত্বে যারা আছেন, তারা তো দু’দিন পরে চলে যান। জবাবদিহিতা তো তাদের নেই।