বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম।
মাননীয় স্পীকার আপনাকে ধন্যবাদ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বোচ্চ সম্মান জানাচ্ছি। শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি আমাদের নেতা, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে।
মাননীয় স্পীকার,
গত ২৭ জুন রাতে মগবাজারের একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরন ঘটেছে। সে বিস্ফোরনে যারা মৃত্যুবরন করেছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়েছেন এবং চিকিৎসাধীন আছেন তাদের সুস্থতা কামনা করছি। চিকিৎসাধীনদের সুচিকিৎসা দেয়ার দাবী করছি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার বর্গের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
মাননীয় স্পীকার,
বাজেটের বিষয়ে আলোচনার আগে আমি আমার নির্বাচনী এলাকার কিছু দাবী-দাওয়া তুলে ধরতে চাই।
মোগলহাট স্থল বন্দরঃ
মাননীয় স্পীকার
লালমনিরহাট জেলাবাসী দীর্ঘ দিন হতে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্তর্গত কুচবিহারের গীদালদহ পর্যন্ত রেলপথটি পূণরায় চালুসহ মোগলহাটে একটি স্থল বন্দর চালুর দাবী জানিয়ে আসছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে রেল চালু নাহলেও ইমিগ্রেশন ও কাষ্টমস সুবিধাসহ স্থল বন্দরটি চালুহলে ঐ এলাকার কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ অথনৈতিক ব্যবস্থার উন্নতি হবে।
আমরা জানতে পেরেছি ব্রিটিশ আমলে ভারত বাংলাদেশর যেসকল পথে যোগাযোগ চালু ছিল সেগুলি চালুর বিষয়ে উভয় দেশ একমত হয়েছেন। সে বিবেচনায় এ গুরুত্বপূর্ন যোগাযোগ পথটি চালু করা জরুরী।
লালমনিরহাট বিমান বন্দর চালুকরণঃ
মাননীয় স্পীকার,
লালমনিরহাট সদর উপজেলার পরিত্যক্ত বিমান বন্দরটি এখন আংশিক ভাবে কার্যকর আছে। লালমনিরহাটে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন এন্ড এ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মানাধীন। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাষ্টার প্লানে উন্নত ও বর্ধিত আকারে এই বিমান বন্দরটির অবস্থান অন্তর্ভূক্ত আছে। এলাকাবাসীর দাবী যতদ্রুত সম্ভব অন্যান্য অবকাঠামোর মধ্যে বিমান বন্দরটিকে প্রাধান্য দিয়ে চালু করার জন্য সরকার উদ্যোগ নিবেন।
অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাঃ
মাননীয় স্পীকার,
মাননীয় অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, বিনিয়োগ বাড়াতে দেশে ১০০টি অর্থনেতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ৯৭টি অঞ্চল স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৯টি উৎপাদন শুরু করেছে। ২৮টির উন্নয়ন চলমান। অর্থনৈতিক অঞ্চল গুলোতে ২১০ জন বিদেশী বিনিয়োগ কারীর কাছ থেকে ২৭.৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে। এটা নিঃসন্দেহে আশার কথা।
মাননীয় স্পীকার,
আমার নির্বাচনী এলাকা লালমনিরহাট সদর উপজেলাতেও একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের দাবী জানিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবরে ডি.ও পত্র দিয়েছিলাম। সে প্রেক্ষিতে কাজের অগ্রগতি ছিল।
অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের লক্ষ্যে ভূমির মালিকানা সহ দাগসূচী ও মৌজা চিহ্নিত করে জরুরী ভিত্তিতে বিস্তারিত তথ্যাদি প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে জেলাপ্রশাসক, লালমনিরহাট বরাবরে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ পত্র প্রেরণ করেন।
ঐ পত্রের প্রেক্ষিতে, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মহোদয় (৩০জানুয়ারী, ২০২০) ৫৯০.১ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনা (প্রয়োজনীয় তথ্যাদিসহ) নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রেরণ করেছেন । কিন্তু এ বিষয়ে এর পর আর কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। আমি জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে ইতিপূর্বেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে দাবী করেছিলাম।
মাননীয় স্পীকার,
৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে লালমনিরহাট কেন বাদ দেয়া হলো সেটি আমরা জানিনা। লালমনিরহাট সদর উপজেলায় কাঙ্খিত অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গড়ে তোলার সকল রকম সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান। এ বিষয়ে জরুরী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে এটা আমাদের দাবী।
বাজেট বিশ্লেষনঃ
মাননীয় স্পীকার,
বাজেট “সরকারের রাজনৈতিক দর্শন” এক কথায় Ñ “রাজনৈতিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং তা বাস্তবায়নের দিক নির্দেশনা।” সে দিকে দৃষ্টি দিয়ে মাননীয় অর্থ মন্ত্রীর প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটের দর্শন“জীবন জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ”খুবই প্রাসঙ্গিক।
জনগণ প্রত্যাশা করেছিল এ বাজেট হবে প্রাথমিক ভাবে জীবন ও জীবিকা রক্ষার বাজেট। কিন্তু ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেট ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। গত অর্থ বছরের চেয়ে প্রস্তাবিত বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বা (৬.২৮ শতাংশ)। প্রশ্ন থেকে যায়, এই বৃদ্ধি কি যথেষ্ট জীবন জীবিকায় প্রাধান্যের বাজেটের জন্য?
ভ্যাকসিন, ঔষধ, ডাক্তার, নার্স, হাসপাতাল, টেষ্টিংল্যাবরেটরী, টেকনোলজিষ্ট, পি.পি.ই, মাস্ক, হ্যান্ডস্যানিটাইজার ইত্যাদির যথেষ্ট পরিমান প্রয়োজন জীবন রক্ষার জন্য। নতুন ভাবে এ সকল সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। সে জন্য অতিরিক্ত অর্থের দরকার হবে।
কভিড -১৯ মহামারীর কারনে জীবিকা হারিয়েছে কোটি কোটি মানুষ। তাদের মধ্যে যারা হত দরিদ্র তাদের না খেয়ে থাকার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। জীবিকা হারিয়ে নতুন দরিদ্র সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২কোটি ৫০ লাখ মানুষ এবং প্রতিদিন এর সংখ্যা বাড়ছে।
করোনার কারনে লক ডাউন ও ব্যবসা বনিজ্যে মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হলে দেশে দুর্ভিক্ষের অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। সেখানেও জীবন বিপন্ন হবে। আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা দিয়ে এ সকল দারিদ্র ও নব্য দরিদ্রদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এখানে সমাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতা অনেক বৃদ্ধি করতে হবে। অর্থের প্রয়োজন বাড়বে।
চলতি বছরের (২০২০-২১) বাজেট প্রায় গতানুগতিক। আগামী বছরের প্রস্তাবিত বাজেট (২০২১-২২) এর প্রায় সমান বলা যায়। সে বাজেট দিয়ে উপরের সমস্যা গুলিকে যথাযথ ভাবে সমাধান সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে, এ বছরের বাজেট বৃদ্ধি করা হয়েছে ১৪ শতাংশ। শুধুমাত্র কভিড-১৯ টিকার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি রুপি। কেবল মাত্র স্বাস্থ্য খাতে ভারতে বাড়ানো হয়েছে (১৩৭ শতাংশ বা ১,২৩,৩৯৪ কোটি টাকা)। পৃথিবীর উন্নত দেশ গুলিতে এ সংখ্যা আরো বেশী। সেভাবে দেখলে সত্যিকার ভাবে আমাদের ২০২১-২২ বাজেটে জীবন ও জীবিকার প্রধান্য যথেষ্ট আছে বলা যায়না।
ধারনা করি, বাজেটে ব্যয় বরাদ্দ ছোট করতে হয়েছে কারন রাজস্ব আয় যথেষ্ট বাড়ার সম্ভাবনা নেই। প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থ বছরে রাজস্ব আয় (রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত কর সমূহ) ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরেও এ অংক একই ছিল। কিন্ত চলতি অর্থ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত (১০ মাসে) আদায় হয়েছে ১লাখ ৯৭ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা (৫৯.৮৭ শতাংশ)। রাজস্ব আদায় ঘাটতি ১লক্ষ কোটি টাকার অধিক হবে, এটা বোধ হয় বলা যায়।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পরে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থ বছরের রাজস্ব যা চলতি অর্থ বছরের সমান সেখানেও আদায় ঘাটতি ১ লক্ষ কোটি টাকার অধিক বা আরও বেশি হবার আশঙ্কা আছে। আবশ্য এটা আগামীতে করোনার বিস্তার ও ক্ষয় ক্ষতির মাত্রার উপর নির্ভর করে কিছু কম/বেশী হতে পারে, তবে ঘাটতি বাড়ার আশঙ্কা বেশী।
প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থ বছরে ঘাটতি ২লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা (জিডিপির হিসাবে ৬.১৭ শতাংশ); সম্ভাব্য রাজস্ব আহরনের ১ লক্ষ কোটির অধিক ঘাটতি এর সঙ্গে যুক্ত হবে। সেক্ষেত্রে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার অধিক বাজেটে অর্ধেকের বেশী (৫৫.১০ শতাংশ; বিগত বছর গুলির প্রকৃত রাজস্ব আয়ের উপর ভিক্তি করে) ঘাটতি থাকবে, অনুমান করা যায়। ঘাটতিকে সব সময় নেতিবাচক ভাবে বা খারাপ ভাবে দেখার কিছু নেই, যদি ঘাটতি পুরনের উৎস নির্ভরশীল হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি পুরনের উৎসগুলি দুর্বল ও অনিশ্চিত। ঘাটতি পুরনে বৈদেশিক উৎস থেকে প্রাপ্তি ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা ধরা হয়েছে; বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিষয়টি অনিশ্চিত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব ১লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। দেশীয় ব্যাংক গুলোর বেশীর ভাগ রুগ্ন। এগুলির উপর নির্ভরশীল হওয়া কতটা বাস্তব সম্মত ? তাছাড়া এতে ব্যাংকের তারল্য সঙ্কট বাড়ার আশঙ্কা থাকে। সে ক্ষেত্রে সাধারন ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়ে পুজি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ব্যাংক ঋণ পাবার ক্ষেত্রে সঙ্কট বাড়বে। ফলসরূপ ব্যবসা সার্বিক ভাবে সংকুচিত হবে, কর্মসংস্থান কমবে।
সার্বিক ভাবে বলা যায় বাজেটের ঘাটতি পূরন প্রায় অনিশ্চিত। ফলোশ্রুতিতে প্রস্তাবিত বাজেটে খাত ভিক্তিক বরাদ্দের সংকুলান যথাযথ নাও হতে পারে।
সে প্রেক্ষিতে আমার প্রস্তাব, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির তুলনামুলক কম গুরুত্ব পূর্ন বা পরে করলেও চলে এমন প্রকল্প গুলি আপাতত স্থগিত রাখা যায়। সে অর্থ বর্তমান প্রেক্ষিতে জরুরী যেমন স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, কৃষি ও শিক্ষা ইত্যাদি খাতে স্থানান্তর করা যায়।
বাজেট বাস্তবায়ন বলতে বুঝায়, যে উদ্দেশ্যে প্রনয়ন করা হল, যথাযথ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হল, তার সম্পূর্ন নাহলেও কাছাকাছি পর্যন্ত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। বছর শেষে যদি দেখা যায়, যে লক্ষ্যে ও উদ্দেশ্যে বাজেট প্রনয়ন করা হল তার বেশীর ভাগ বাস্তবায়ন হলনা। বাস্তবায়িত হল এমন কিছু যা বাজেটের লক্ষ উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য পূর্ন নয়। তাহলে বাজেট বাস্তবায়ন, অংকের হিসাবে“হয়েছে”বলা হলেও নীতিগতভাবে বাজেটকে বাস্তবায়িত বলা যায়না। বর্তমান বাজেট সম্পর্কেও সে আশংকা থেকে যায়। কেননা এ বাজেটে “জীবন জীবিকার প্রাধান্য” বলা হলেও কার্যত সেগুলি অনুপস্থিত।
সামাজিক নিরাপত্তা ঃ
মাননীয় স্পীকার,
২০২১-২২ অর্থ বছরে ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে। প্রস্তাবিত বাজেটের ১৭.৮৩ শতাংশ। চলতি অর্থ বছরের চেয়ে ১২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা বেশী বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে টাকার অংকে ও মুল বাজেটের শতাংশের হিসাবে বিষয়টি স্বস্তিদায়ক।
কিন্তু সামাজিক নিরাপত্তার নামে বিশাল এই বরাদ্দের প্রায় ২৫ শতাংশ (৩০হাজার কোটি টাকা) ব্যায় হবে অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের পেনশনের জন্য। আইন আণুযায়ী সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের পেনশন ভাতা তাদের প্রাপ্য অধিকার। এটা সরকার তাদের দিতে বাধ্য। এটাকে অবস্থার প্রেক্ষিতে নতুন ভাবে বরাদ্দ বলা যায় না। এ ধরনের আরও কিছু খাতে বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। যাকে অবস্থার পেক্ষিতে বাড়ানো বলা যায় না
সামাজিক নিরাপত্তার আওতাভুক্ত বলতে বুঝায় বয়স্ক, বিধবা ও স্বামীনিগৃহীতা, রুপান্তরিত মানুষ ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধি, মাতৃত্বকালীন, হতদরিদ্র,পূর্বের বেকার, করোনা কালীন নতুন দরিদ্র ও কর্মহীন এদেরকে। প্রস্তাবিত বাজেটে যাদের বরাদ্দ খুবই সামান্য (৬ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা বা মুল বাজেটের ১.১১ শতাংশ )।
সরকারী হিসাব মতে উল্লেখিত বিষয় গুলিতে নতুন অর্থ বছরে সুবিধা ভোগির সংখ্যা হবে ১কোটি ২লাখ ৫৫ হাজারের মত। এদের প্রত্যেককে সরকারী ভাবে প্রদান করা হবে মাত্র ৫০০ টাকা এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ৭৫০টাকা প্রতি মাসে। সামাজিক নিরাপত্তার নামে বরাদ্দের এই অর্থ খুবই সামান্য বলা যায়।
এ বিষয়ে গবেষনা লব্দ তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি মাসে জন প্রতি নুন্যতম ব্যায় ১,৮৬২ টাকা। সরকারী ভাবে সামাজিক সুরক্ষার নামে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা ও কোন কোন ক্ষেত্রে ৭৫০ ব্যায় ভার বহন যৌক্তিক নয়। মাথা পিছু আয়ে আমাদের থেকে পিছিয়ে আছে আামদের পার্শবর্তী দেশ ভারত। তারাও সামাজিক নিরাপত্তার উল্লেখিত বিষয়ে সাধারন জনগনকে প্রতি মাসে প্রদান করে বাংলাদেশী টাকায় ১২০০ টাকা। যা আমাদের প্রায় আড়াই গুন।
এছাড়া করোনাকালীন সময়ে জীবিকা হারিয়ে নতুন বেকার হওয়া ২কোটি ৫০ লাখ এবং পূর্বের কর্মহীন বেকারদের জন্য জীবন রক্ষা ও জীবিকার কোন ব্যবস্থা প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ মন্ত্রী রেখেছেন চোখে পড়েনি।
এখন এ সকল সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি খাতে বরাদ্দের বন্টন বিষয়ে অনিয়মের সরকারী ভাবে প্রাপ্ত তথ্য তুলে ধরছি। যতটুকু বরাদ্দ হয় সে বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আওতাধীন জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল (ঘঝঝঝ- ঘধঃরড়হধষ ঝড়পরধষ ঝধভবঃু ঝঃৎধঃবমু) এর চলতি বছরের মাঠ জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা খাত থেকে সাহায্য প্রাপ্ত মানুষের মধ্যে ৪৬ শতাংশ সরকারী কোন সাহায্য পাওয়ার উপযুক্ত নয়। অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক প্রাপক অনিয়মের মাধ্যমে প্রকৃত প্রাপককে বঞ্চিত করে এ সুবিধাটি ভোগ করছেন।
প্রস্তাব করছি সামাজিক নিরাপত্তার এই খাতে বরাদ্দের পরিমান আরো বাড়ানো হোক। যে গুলি বরাদ্দ সাধারন অবস্থায় দেয়া হয় তার বাইরে সামাজিক নিরাপত্তার আওতা আরো সম্প্রসারিত করে বেকার যুবকদের ভাতার ব্যবস্থা করা হোক।
তাছাড়া, যারা উপযুক্ত নাহয়েও এ ভাতা লাভ করছেন তাদের বিষয়টি পরীক্ষা করে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ভাতা পাওয়ার উপযুক্ত ব্যাক্তিদের তালিকার আওতায় এনে ভাতার ব্যবস্থা করা হোক।
স্বাস্থ্য খাতঃ
মাননীয় স্পীকার,
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা । যা চলতি অর্থ বছরের চেয়ে ৩ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বেশী। কিন্তু জিডিপির হিসাবে ০.৯৫ শতাংশ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সুপারিশ অনুযায়ী স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ হওয়া উচিত কমপক্ষে জিডিপির ৫ শতাংশ। সেখানে গত ১২ বছরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল জিডিপির ১ শতাংশের নীচে।
গনমাধ্যমে প্রকাশিত স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম এখন দেশ ব্যাপি আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতি কমানোর জন্য কোন কার্যকর উদ্দোগ চোখে পড়েনা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে মাননীয় মন্ত্রী সহ দায়িত্ব প্রাপ্তরা দুর্নীতির বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন বলে মনে হয় না। অভিযোগ গুলো গুরুতর। দেশবাসী আশা করে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে যথাযথ তদন্ত হবে ও দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
প্রস্তাবিত ২০২১-২২ বাজেটে কোভিড -১৯ এর টিকা প্রয়োগের কথা বলা হলেও আমদানির জন্য এ খাতে আলাদা কোন অর্থ বরাদ্দের উল্লেখ নেই। তবে বাজেট বক্তৃতায় কিছুদেশ ও সংস্থার কাছ থেকে ভ্যাকসিন সরবরাহ এবং ভ্যাকসিন ক্রয়ের অর্থ প্রাপ্তির আশ্বাস উল্লেখ করা আছে (বাজেট বক্তৃতা - পৃষ্ঠা-৪৫)। ভ্যাকসিন খাতে যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে।
বর্তমান বিশ্বে প্রতিটি দেশই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের অস্ত্র হিসাবে ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী প্রতিটি দেশের ৮০ শতাংশ জনসাধারনকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা গেলে জীবন যাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। সে লক্ষ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক দেশ যথেষ্ট সফলতাও পাচ্ছে। লক্ষনীয় হল আমাদের দেশে ভ্যাকসিন সংগ্রহ এখন পর্যন্ত প্রকৃত অর্থে সুনির্দিষ্ট ও সুনিশ্চিত বলা যায়না। ফলে, ভ্যাকসিন দেয়ার কাজ পুনরায় শুরু ও শেষ কিভাবে ও কবে হবে কেও জানে বলে মনে হয়না।
অনেক দেশের ন্যায় আমাদের দেশেও একটি গবেষনা প্রতিষ্ঠান ভাকসিন তৈরিতে বেশ কিছু সাফল্য দেখিয়েছেন বলে গন মাধ্যমের খবরে জানা যায়। কিন্তু সরকারী সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রনকারী সংস্থার অসহযোগীতার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। যাতে করে সে উদ্দোগটি মুখ থুবরে পরার উপক্রম হয়েছে। এ বিষয়েয় সরকারী হস্তক্ষেপ ও জরুরী সহায়তা দেয়া গেলে হয়ত আমরা দেশীয় ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হব। উদ্দোগটি সমস্যা উত্তরনে ব্যপক ভাবে সহায়তা করতে পারে।
২০১৯ সালে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্বব্যাংকের এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ৭৩.৮৭ শতাংশ পরিবার স্বাস্থ্য সেবা নিতে গিয়ে দারিদ্রের শিকার হয়। দক্ষিন এশিয়ার দেশ গুলোতে যেখানে স্বাস্থ্যসেবার জন্য সরকারের তরফ থেকে মাথাপিছু বছরে ৪০১ ডলার ব্যায় করা হয়। বাংলাদেশ সেখানে ব্যায় করে মাত্র ১১০ ডলার।
মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সামগ্রীর যেমন - এনালাইজার, ক্যাথল্যাব, ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, ভেন্টিলেটর, কার্ডিয়াক মনিটর, সিটিÑএপারাটাস, হাসপাতালশষ্যা, ফ্লোÑমিটার যুক্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার; আমদানীর উপর সকল প্রকার শুল্ক, অগ্রীম ইনকাম ট্যাক্স, এজেন্সি ট্যাক্স প্রত্যাহারের জন্য ব্যবসায়ীরা দাবী করেছেন। তাদের দাবী পূরন হলে দেশের মানুষ অনেক কম খরচে চিকিৎসা সেবা পাবে এমনটি আশা করা যায়।
হেমোডায়ালাইসিসের প্রত্যেক রোগীর জন্য একটি ব্লাড টিউবিং ব্যবহার করতে হয়, তার ট্যাক্স ছিল ২৫ শতাংশ তা কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন। সে জন্য অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
ক্যান্সার ও হৃদ রোগের কিছু ঔষধে রেয়াতি সুবিধা দিয়েছেন, উদ্দেশ্য ঔষধের দাম হ্রাসপাবে এবং এ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা ব্যায় কমবে। কিন্তু এধরনের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতায় দেখা যায় বাস্তবে ঔষধ প্রস্তত কারকরাই লাভবান হন, রোগীরা নয়। এ বিষয়ে, সরকারকে বিশেষ ভাবে দৃষ্টি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
সুশাসনের অভাব ঃ
মাননীয় স্পীকার,
যতই অর্থ বরাদ্দ দেয়া হোক সুশাসন না থাকলে দুর্নীতি, অপচয় ও সমন্বয় হীনতার কারনে বাজেট বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। সুশাসন না থাকলে অর্থ বরাদ্দের সুফল যাদের উদ্দেশ্যে বরাদ্দ দেয়া হয় তারা লাভ করেন না। এক কথায় সুশাসন ছাড়া বাজেট তৈরি ও বাস্তবায়ন সম্পূর্ন অর্থহীন। বাজেটের উদ্দেশ্য জীবন মানের উন্নয়ন। শান্তি, স্বস্থি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছাড়া মানুষের জীবনমান উন্নয়ন সম্ভব হয়না। সুশাসনের মাধ্যমেই সেটা সম্ভব। এ বিষয়ে বাজেটে কোন দিক নির্দেশনা নেই। বরং সুশাসনে ব্যত্যয়ের সুযোগ বাজেটে রাখা হয়েছে। কিছু উদাহরন দেয়া গেল।
কালো টাকা সাদা করা ঃ-
কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ রাখা হয়েছে সেটা দুর্নীতিকে বৈধতা দেয়ার সামিল এটি সুশাসনের পরিপন্থী। এ বিষয়টি নিশ্চিত ভাবে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে। যে কারনে এ সুযোগ রাখা হয়েছে বলা হয় সেটা হল দেশে বিনিয়োগবৃদ্ধি ও বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ করা। বেশ কয়েকটি বাজেটে কিছু দিন থেকে এ সুযোগ দেয়া হয়ে আসছে। ফলাফল শূন্য।
বিশ্বব্যাপি কালো টাকা পরিমাপের সবচেয়ে বড় গবেষক জার্মান অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ফ্রেডরিক স্নাইডারের হিসাবে বাংলাদেশের মোট কালো টাকার পরিমান জিডিপির ২৮ শতাংশ। (প্রায় ১০ লাখ কোটি টাকার মত)। গত ৫০ বছরে ২০ বার কালো টাকা সদা করার সুযোগে মাত্র ১৮ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে।
বাংলাদেশফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইঋওট)গত পাঁচ বছরে ১হাজার ২৪টি অর্থ পাচার ঘটনার প্রমান পেয়েছে। বিএফআইইউ (ইঋওট)সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে অর্থ পাচারের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তথ্য প্রমান সহ প্রতিবেদন পাঠিয়েছ। ফলাফল, এখন পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এমন কোন তথ্য নেই।
আবার সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশীদের সঞ্চয়ের পরিমান উর্দ্ধমুখী এমন খবর আমরা দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হতে দেখছি। ২০১৯ সাল পর্যন্ত উক্ত ব্যাংকে বাংলাদেশীদের আমানতের পরিমান ছিল ৫ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা।
আন্তর্জাতিক বানিজ্যের নামে পাচার হওয়া অর্থের তথ্য প্রকাশে বিশ্বব্যাপি নির্ভর যোগ্য প্রতিষ্ঠান। (জিএফআই) গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি তাদের মতে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে বানিজ্যের আড়ালে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হয় ৭৩৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বা (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা হিসাবে) প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা । বিভিন্ন ভাবে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে ।
অবৈধ ভাবে অর্জিত অর্থ বৈধতা দেয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কালো টাকা সাদা করার তা যেকোন শর্তেই হোক বন্ধ করা উচিত বলে মনি করি।
ব্যাংকিং খাতের বর্তমান হালঃ
আমাদের ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো অত্যান্ত নাজুক অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে। বাংলাদেশ ব্যংকের রিপোর্ট অনুযায়ী খেলাপি ঋনের পরিমান ১লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। বংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, হলমার্কের ৪ হাজার কোটি টাকা অর্থ লোপাট, বিসমিল্লাহ্্ গ্রুপের আর্থিক অনিয়ম এবং বেসিক ব্যাংকের অনাদায়ী খেলাপি ঋন উদ্ধারের বিষয়ে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ এখনও দৃশ্যমান নয়।
২০১৮-২০২১ এই স্বল্প সময়ে ৫৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার অনিয়ম চিহ্নিত করেছে সরকারী প্রতিষ্ঠান কম্প্রোট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)। তাদের তথ্য মতে এ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া আর্থিক অনিয়মের ৫২.১৮ শতাংশই হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ব বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকিং খাতের। যার পরিমান ৩১ হাজার কোটি টাকা ।
(তথ্যসূত্রঃ ০৪-০৩-২০২১ যুগান্তর)
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিএজি ২০১৩ সালের যে রিপোর্ট তৈরী করেছে সেখানে ব্যাংকিং খাতের আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত হয় ৬৫২ কোটি টাকা। আর সর্বশেষ ২০২১ সালে যে রিপোর্ট তারা তৈরী করেছে সেখানে ১০ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা হচ্ছে ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম। অর্থাৎ এই ৮ বছরে অনিয়মের হার বেড়েছে ১৬.৮৬ গুন। (সূত্রঃ ৪/৩/২০২১ যুগান্তর)
খেলাপী ঋণ না দেখিয়ে তা মুছে ফেলার সক্রিয় প্রয়াস চলছে। খেলাপী ঋণ বাড়লেও অনিয়মের মাধ্যমে সেটা লুকিয়ে ফেলা হচ্ছে। ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের ৪০ শতাংশই হচ্ছে খেলাপী ঋণ। বলে বিশেষজ্ঞদের মত।
বিগত ১০ বছরে ব্যাংকিং খাতের অবস্থা খারাপের দিকে গেছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, বিগত সময়ে আর্থিক অনিয়মের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দায়ীদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যে কারণে, অনিয়মের পরিমাণ আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা নাহলে ভবিষ্যতে আর্থিক অনিয়মের পরিমাণ আরো বাড়বে। এই অনিয়ম রোধে সু¯পষ্ট কোন দিক নির্দেশনা বাজেটে পরিলক্ষিত হয়নি। (তথ্যসূত্রঃ ০৪-০৩-২০২১ যুগান্তর)
কৃষিঃ
মানীয় স্পীকার,
গত বাজেট অধিবেশনে (২৯/৬/২০২০) আমি বলেছিলাম “আমাদের কৃষিখাত বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। জীবন, জীবিকা, ও অর্থনীতির সবগুলো এ খাতের অবদান, নিশ্চিত ভাবে ভরসার স্থল।” আমি আরো বলেছিলাম“করোনাকালীন সময়ে এবং করোনাত্তোর অর্থনীতি পুনর্গঠনের প্রয়োজনে সারা বিশ্বের কারো কোন সহায়তা ছাড়া বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে যদি কৃষি সচল থাকে।”
গুরুত্ব অনুধাবনে এবারের বাজেটে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সর্বোচ্চ ভর্তুকি দেয়া হয়েছে কৃষিতে নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো দিক। তবে আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় কৃষি ভর্তুকির টাকা যাদের কারনে দেয়া হয় তারা সাধারনত পায়না। তাদের বঞ্চিত করে কিছু মধ্যস্বত্যভোগী বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এ অর্থ আত্মসাত করে। এ বিষয়ে মাননীয় কৃষিমন্ত্রী এবং যারা কৃষি নিয়ে পরিকল্পনা প্রনয়ন ও বাস্তবায়নের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
শিক্ষা খাতঃ
মানীয় স্পীকার,
২০২১-২২ অর্থ বছরে শিক্ষাখাতে টাকার অংকে বর্তমান বাজেটে বরাদ্দ বাড়লেও জিডিপির অনুপাতের হিসাবে কমছে। চলতি অর্থ বছরের, ২.০৯ শতাংশ চেয়ে শিক্ষা খাতে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থ বছরে বরাদ্দ জিডিপির অনুপাতিক হার ২.০৮ শতাংশ ।
মহামারির কভিড-১৯ এর কারনে দীর্ঘদিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দূরশিক্ষন কার্যক্রম প্রবর্তন করা প্রয়োজন। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রযুক্তিগত সুবিধার আওতায় নিয়েআসা ও প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে ডিজিটাল যন্ত্র তুলে দেওয়ার বিষয়টি বাজেটে নেই।
[
বাজেটে উচ্চ শিক্ষায় ১৫ শতাংশ কর আরোপ করা (বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল শিক্ষা) হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে এই খরচ শিক্ষার্থীদেরই বহন করতে হবে। এতে উচ্চ শিক্ষার ব্যায় বেড়ে যাবে ফলে উচ্চ শিক্ষার প্রসার বাধাগ্রস্থ হবে। এটা আরোপ নাকরার সুপারিশ করছি।
মোবাইল ব্যাংকিং ঃ
মাননীয় স্পীকার,
বাংলাদেশের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস বা গঋঝ বর্তমানে আর্থিক লেনদেনে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সরকারী এবং বেসরকারী খাতে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই খাতে গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির পাশা পাশি সেবার পরিধিও বাড়ছে প্রতিনিয়ত। উদীয়মান এই গঋঝ খাতে বিদেশী প্রতিষ্ঠানও বিনিয়োগ করেছে বলে এ ব্যবসার সাথে জড়িত কর্ণধারগন আমাকে অবগত করেছেন।
গঋঝ খাতে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর্পোরেট কর হার ৩২.৫% থেকে বাড়িয়ে ৪০% করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত করহার বৃদ্ধির কারনে এ ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ফলে ভবিষ্যতে হয়তো বিদেশী প্রতিষ্ঠান অর্থ লগ্নী করতে আগ্রহ হারাতে পারে ও এ সেবাটি সম্প্রসারণ নাহয়ে সংকুচিত হতে পারে। সে কারনে আমি করহার বৃদ্ধি না করে আগের ৩২.৫% বহাল রাখার দাবী জানাচ্ছি।
সরকারী চাকুরীতে প্রবেশে বয়স বৃদ্ধিঃ
মাননীয় স্পীকার,
করোনা মহামারীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। সে কারনে উচ্চ শিক্ষার শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবন শেষ করতে পারেন নি। আবার লক ডাউনের কারনে অফিস আদালতের কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় সরকারী চাকুরীর নিয়োগ কার্যক্রম থমকে আছে। এসব কারনে অনেকের সরকারী চাকুরীতে প্রবেশের নির্ধারিত বয়স ৩০ পার হয়েছে, অনেকের পার হওয়ার পথে। এসব কারনে তারা চাকুরীতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধি করে ৩২ বৎসর করার দাবী জানিয়েছেন। বিষয়টি বিবেচনার পক্ষে যুক্তি আছে, মনেকরি।
ঔষধের মুল্য নির্ধারনঃ
মাননীয় স্পীকার,
দেশে বর্তমানে ১১৭টি ঔষধ, ভ্যাকসিন, পরিবার পরিকল্পনার সামগ্রী ছাড়া অন্য সকল ঔষধের মূল্য ঔষধ প্রস্তত কারক কোম্পানী সমূহ নিজেরা সরাসরি নির্ধারন করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে জানিয়ে দেন। ঔষধ প্রশাসন কেবল মূসক (ভ্যাট) যুক্ত করে ঔষধের মূল্য ঘোষনা করেন। ১৯৮২ সালের জাতীয় ঔষধ নীতি যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করলে ঔষধের খুচরা মূল্য ন্যুনতম পক্ষে ৫০% কমে আসবে বলে এ বিষয়ে কাজ করেন এমন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। বিষয়টির দিকে বিশেষ নজর দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।
বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারী ঃ
মাননীয় স্পীকার,
এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মচারীরা উৎসব বোনাস, চিকিৎসা ভাতা এবং বাড়ী ভাড়া ও আন্যান্য সুযোগ সুবিধা গুলো সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ন্যায় একই হারে পাননা বলে অভিযোগ করেছেন। তাদের দাবি উল্লেখিত সুযোগ সুবিধা গুলি সরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যেন সামঞ্জস্যপূর্ন হয়। বিষয়টি পরীক্ষা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।
দায়িত্বশীল সরকারী কর্মকর্তাদের দ্বারা অর্থের অপচয়ঃ
মাননীয় স্পীকার,
সরকারী উচ্চপদস্থ কর্ম-কর্তাদের গাড়ী কেনার জন্য বিনা সুদে ৩০ লাখ টাকা ঋণ দেয়া হয় এবং রক্ষনাবেক্ষনের জন্য দেয়া হয় মাসিক ৫০ হাজার টাকা। এ সুবিধা সরকার থেকে দেয়ার উদ্দেশ্য যাতে পরবর্তীতে সুবিধা প্রাপ্ত ব্যক্তিরা সরকারী পরিবহন পুলের গাড়ী ব্যবহার না করতে হয়। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় এ নিয়মে সুবিধাপ্রাপ্তরা বেশিরভাগ সরকারী ঋণে গাড়ী কেনার পরও সরকারী পরিবহন পুলের এক বা একাধিক গাড়ীও ব্যবহার করছেন। প্রকৃত পক্ষে এটিকে রাষ্ট্রের জন্য অনেক বড় অপচয় বলা যায়। এধরনের সরকারী দায়িত্বশীলদের দ্বারা জনগনের অর্থ অপচয়ের আরও বিভিন্ন তথ্য শোনা যায়। বিষয় গুলির দিকে সরকারকে বিশেষ ভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। এখানে অর্থ সাশ্রয় হলে সে অর্থে অনেক অতি প্রয়োজনীয় জনকল্যান মুলক ব্যায়ে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
মূল্যস্ফীতিঃ
করোনার কারনে সাধারন মানুষের আয় কমেছে আবার একই সাথে ব্যায় বেড়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারন মানুষ ব্যবহার করে এই ধরনের ভোগ্য পন্যের উপর কোন অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়নি। উদ্দেশ্য নিত্য পন্য সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকবে। কিন্তু বাজেট উপস্থাপনের ৩/৪ দিন পার না হতেই অহেতুক ভাবে নিত্য পন্যের মূল্য বাড়ছে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে। সার্বিক ভাবে সরকার বাজার মুল্য নিয়ন্ত্রন করতে পারছেনা। যার জন্য সাধারন মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। দ্রব্য মুল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রনে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
গন-পরিবহনের সরকারী নির্দেশনা অমান্যঃ
মাননীয় স্পীকার,
করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি ও বিভিন্ন বিধি-নিষেধ মেনে গণ পরিবহন চলাচল করার অনুমতি দিয়েছেন সরকার। সরকারী নির্দেশনা ছিল বাসের ধারন ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে এবং নির্ধারিত ভাড়ার দেড়গুণ পরিশোধ করে যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল করবে। কিন্তু ঢাকা শহরে বাসের যাত্রী বসার যে ধারণ ক্ষমতা সেটা পূরণ হওয়ার পরও দাঁড়ানো যাত্রী নিয়ে অনেক বাস-ই চলাচল করছে। কিন্তু সকল যাত্রীকে ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে দেড়গুণ।
সরকারী নির্দেশনার কারণে যাত্রীরা ভাড়া দিচ্ছেন বেশী কিন্তু যাত্রী পরিবহনের সাথে জড়িতরা সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে অধিক যাত্রী বহন করছেন। এটা সুশাসনের অভাব।
২০২১-২২ অর্থ বছরে খাত ওয়ারী বিশ্লেষনে কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং মৎস ও প্রানী সম্পদ খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ২৪ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরে অর্থাৎ ২০২০-০২১ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল ২৪ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। আর্থাৎ বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ২৬৬ কোটি টাকা যা যথেষ্ট নয়।
ইউনেস্কোর মতামত অনুযায়ী যেখানে দেশের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য বাজেটে প্রতিটা দেশের জিডিপির অনুপাতে নূন্যতম ৬ শতাংশ বরাদ্দ শিক্ষা খাতে করা উচিত। সে হিসাবে বাংলাদেশ জন্মের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কখনও বাজেটে শিক্ষাখাতে জিডিপির ২.৬ শতাংশের বেশী বরাদ্দ রাখা হয়নি।
মাননীয় স্পীকার,
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রাইভেট ক্লিনিক, প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র, দন্ত ও এক্সরে থেকে বার্ষিক রেজিষ্ট্রেশনেরসময়বিভিন্নধরনেরহয়রানীরশিকারহন।এসবপ্রতিষ্ঠানকে এক বৎসরেরপরিবর্তে ৫বৎসরের জন্য রেজিষ্ট্রেশনদিলেহয়রানী ও দুর্নীতিকমবে। আশাকরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়েব্যবস্থা নিবেন।
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি
যানজট রাজধানী ঢাকার একটি স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। আবার সমগ্র পৃথীবির বায়ু দুষনের তালিকায় ঢাকার অবস্থান অন্যতম প্রধান শহর গুলোর মধ্যে একটি। যানজট এবং বায়ু দুষনে কাছে রাজধানীর মানুষ এখন অসহায় হয়ে পড়েছে। এই অচলাবস্থার পরিত্রানে কারো কোন নজর আছে বলে মনে হয়না।
ঢাকা এবং এর আশে পাশের জেলাগুলোতে অবকাঠামো উন্নয়নের অনেকগুলো প্রকল্প চলমান আছে। চুক্তিপত্রে প্রকল্পের কাজ শুরু এবং শেষ করার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে, জনদুর্ভোগ লাঘবে থাকে সুস্পষ্ট কিছু দিক নির্দেশনা। বাস্তবে এর কোন কিছুই মানা হয়না।
বিভিন্ন অজুহাতে উন্নয়ন কাজের সময়সীমা কয়েক দফা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যায়বৃদ্ধি পেয়েছে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত । প্রল্পের তদারকিতে নিয়োজিত ব্যাক্তিবর্গের উদাসিনতা এবং বাস্তবায়নাধীন প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতির কারনে উপকার ভোগী সাধারন জনগন এরই মধ্যে বলতে শুরু করেছে কাজ শেষ করার পরিবর্তে প্রকল্প ব্যায় বাড়ানো দিকেই প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশী দৃষ্টি।
বর্ষাকাল শুরু হয়েছে এই দুর্ভোগ আরো বাড়বে। বাড়বে যানজট। দীর্ঘ সময়ের যানজটে গাড়ীর নির্গত ধোয়ায় বায়ুতে অক্সিজেনের পরিমান কমে কার্বনডাই অক্সাইডের পরিমান বেড়ে যাবে। বৃদ্ধি পাবে বায়ু দুষনের পরিমান । কর্মমুখী মানুষের অনেক কর্মঘন্টা অপচয় হবে। দুর্ঘটনায় মানুষের প্রানহানীরও আশঙ্কা আছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ আশা করে এবার অন্তত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।
মোঘলহাটঃ
মাননীয় স্পীকার,
আমার নির্বাচনী এলাকা লালমনিরহাট সদর উপজেলা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুচবিহার জেলার সংলগ্ন। সদর উপজেলার মোঘলহাট ইউনিয়ন পশ্চিম বঙ্গের সীমানায় অবস্থিত। মোঘলহাট সীমান্ত অতিক্রম করলে কুচবিহারের গীদালদহ। মোঘলহাট গীদালদহ হয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের রেল ও স্থল যোগাযোগ ব্রিটিশ আমল থেকে চালু ছিল। পরবর্তীতে পাকিস্তান আমলে প্রথমে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়। কিন্তু উভয় দিকের কাষ্টমস ও ইমিগ্রেশন সহ স্থল পথে চলাচল দীর্ঘদিন অব্যাহত ছিল। পরে সেটিও বন্ধ হয়।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা জিডিপির প্রবৃদ্ধিঃ
যেখানে ঘাটতি সংকুলান করার জন্য দেশী বিদেশী ঋনের উৎসের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে সেখানে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যয় বৃদ্ধি করা হবে কিভাবে, সেটি সুস্পষ্ট নয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হিসাব করা হয়েছে ৭.২ শতাংশ। সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস শীর্ষক বৈশ্বিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে একই সময়ের জন্য তাদের পূর্বাভাস, বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৫.১ শতাংশ। সেই একই রিপোর্টে বিশ্বব্যাংক বলেছে চলতি বছরে (২০২০-২০২১) আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৩.৬ শতাংশ। অথচ (২০২০-২১) অর্থ বছরের বাজেট ঘোষনার সময় বলা হয়েছিল জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৮.২ শতাংশ, পরে সংশোধিত বাজেটে ৬.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি পূনঃ নির্ধারন করা হয়েছে। আসলে কত হয়েছে আমরা জানি না। আমাদের প্রশ্ন বিশ্বব্যাংকের হিসাবে আমাদের প্রবৃদ্ধি দেশীয় ভাবে নির্নেয় সংখ্যার কম কেন?
কভিড মহামারির কারনে অর্থনীতি বিশ্বব্যাপি মন্দা ও অনিশ্চয়তা হতেই পারে। এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল জিডিপিতে প্রবৃদ্ধির ফলে সাধারন জনগন কতটুক উপকৃত হচ্ছে। অতীতের অভিজ্ঞতায় বর্ধিত জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাধারন মানুষের মঙ্গলে উল্লেখযোগ্য তেমন কোন ভূমিকা রাখতে দেখা যায়নি।
চালু করা এখন সময়ের দাবী। বিমান বন্দরের রানওয়ের কিছুটা সংস্কার করে অভ্যন্তরিণ যাত্রীবাহী বিমান চালু করা যেতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিমান বন্দরটি চালু হবে মর্মে একমত হয়েছিলেন। সে কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট এলাকাবাসীর দাবী তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
শিক্ষা খাতঃ
বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭১,৯৫৩ কোটি টাকা। সমগ্র বাজেটের ১১.৯১ শতাংশ এবং জিডিপির অনুপাতে ২.০৮ শতাংশ। চলতি অর্থ বছরের বাজেটের চেয়ে ৫হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা বেশী।